ডেস্ক রিপোর্ট:
রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে টেনে এনে পুকুরে ফেলেছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী তাকে ধরে নিয়ে ১২ থেকে ১৫ ফুট গভীরের পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়।
অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের ছেলেরা অন্যায় দাবি নিয়ে আসত আমার কাছে। সে সব দাবি না মানায় তারা আমার উপর ক্ষুদ্ধ ছিল। তাদের দাবিগুলো মানার মতো থাকে না।’
তিনি বলেন, ক্লাসে উপস্থিতি কম থাকায় দুজন ছাত্রের ফরম পুরণ হয়নি। ওই দুই ছাত্রের ফরম পুরণ করানোর জন্য সকালে কয়েকজন আমার কাছে এসেছিল। কিন্তু আমি বিভাগীয় প্রধানের কাছে যেতে বলি। এ সময় তারা আমাকে নিয়ে আমার সামনে অশালীন মন্তব্য করে। এতে আমি তাদের উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে কয়েকটি কথা বলি। এরপর তারা আমার উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে বের হয়ে যায়। পরে দুপুরে নামাজ পড়ে অফিসে যাওয়ার সময় কামাল হোসেন সৌরভ আমার পথ আটকে দাঁড়িয়ে বলে স্যার কথা আছে। একটু পুকুরের ধারের দিকে আসেন। আমি যেতে না চাইলে তারা আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়। এরপর তারা পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে দুজনের মুখ বাঁধা ছিল।
অধ্যক্ষ বলেন, যেখানে আমাকে ফেলে দিয়েছে সখানকার পানির গভীরতা ছিল ১২ থেকে ১৫ ফুট। আমি সাঁতার জানতাম বলে বেঁচে গেছি। সাঁতার কেটে পাড়ে চলে এসেছি। সাঁতার না জানলে হয়তো আজই শেষ হয়ে যেতাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কম্পিউটার বিভাগের শেষ পর্বের ছাত্র সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন অধ্যক্ষকে রাস্তা থেকে তুলে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। অধ্যক্ষ সাঁতার কেটে কিনারে এলে আশপাশের কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে।
পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান রিগেন বলেন, অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগের ছেলেরা জড়িত কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
নগরের চন্দ্রিমা থানার ওসি শেখ গোলাম মোস্তাফা বলেন, খবর পেয়ে পলিটেকনিকে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ দেখে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।