শনিবার,১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


পুরুষ বন্ধ্যাত্বের বড় কারণ স্ট্রেস


পূর্বাশা বিডি ২৪.কম :
০২.০১.২০১৫

image_112243_0
ডেস্ক রিপোর্ট :
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের বড় কারণ স্ট্রেস। সচেতনতা আর জীবনশৈলীর পরিবর্তনে সমস্যা কমতে পারে। মাত্রাছাড়া স্ট্রেস মানে শরীরে আরো এস বা রিয়েকটিভ অক্সিজেন স্পিসিস নামে ক্ষতিকর এক কেমিক্যালের রমরমা।
ক্যানসার ঘটানো থেকে শুরু আরো অসংখ্য বিপত্তি ডেকে আনতে যার কোনো জুড়ি নেই। পুরুষ বন্ধ্যাত্বের মূলেও সে এক এবং অদ্বিতীয়।
স্পার্ম কাউন্ট কমিয়ে, টেস্টোস্টেরোন তৈরিতে বাধা দিয়ে শরীরে হুলুস্থুল লাগাতে বিশেষ পারঙ্গম সে। যত স্ট্রেসের মাত্রা বেশি, তত তার কু-প্রভাব। তার সঙ্গে অনিয়মিত জীবনযাপন যুক্ত হলে তো কথাই নেই। সবে মিলে খুলে যায় বন্ধ্যাত্বের সদর দরজা।
আধুনিক গবেষণা বলছে, ক্রমবর্ধমান মেল ইনফার্টিলিটির সব চেয়ে বড় কারণ এগুলোই। স্ট্রেস কামাতে উঠে পড়ে লাগলে ও জীবনযাপনের নিয়ম মানলে যা কাটানো যায় সহজেই।

স্ট্রেস কমাতে

কীসে স্ট্রেস হয় ও কীভাবে তা কাটাতে পারবেন তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করুন। পুরোপুরি কাটাতে পারবেন, এমন নয়। তবে চেষ্টা করলে তাকে হ্যান্ডেল করতে পারবেন সহজেই। স্ট্রেসের কারণগুলিকে পর পর লিখে, কোন কোন পথে সম্ভাব্য সমাধান আসতে পারে তা পাশে লিখে সেই মতো চললেই কাজ সারা। সব সময় আবেগে না চলে যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে চললে তা খুব কঠিন কিছু নয়।
যেমন ধরুন, সন্তান আসছে না বলে যদি টেনশন করেন, তাতে সন্তান আসার পথ সুগম তো হয়ই না বরং সমস্যা বাড়ে, কখনও সরাসরি স্ট্রেসের কারণে, কখনও স্ট্রেস যে ভুল জীবনের পথে ঠেলে দেয় তার দৌলতে।
এ রকম পরিস্থিতিতে সেল্ফ হেল্প ও বন্ধু-বান্ধবের সাহায্যে কাজ না হলে মনোবিদের পরামর্শ জরুরি। জরুরি কয়েকটি নিয়ম মেনে চলা।
জীবনযাপনের নিয়ম
মন ভালো থাক না থাক, দিনে অন্তত ৩০-৪৫ মিনিট শরীরচর্চা করুন। জোর কদমে হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, জিমে যাওয়া, যা খুশি। বৃটিশ জার্নাল অফ স্পোর্টস মেডিসিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, যারা একেবারে শুয়ে-বসে থাকেন তাদের চেয়ে যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তাদের স্পার্ম কাউন্ট প্রায় ৪৪ শতাংশ বেশি থাকে।
শুয়ে-বসে থাকলে, বিশেষ করে দিন-রাত টিভি দেখার অভ্যেস থাকলে তা বদলে ফেলুন। কারণ বিজ্ঞানীদের মতে, সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার বেশি টিভি দেখলে স্পার্ম কাউন্ট কমে যেতে পারে।
স্ট্রেসের প্রভাব কাটাতে বা স্ট্রেস ঠেকাতে যোগা-মেডিটেশন-ডিপ ব্রিদিং করুন নিয়মিত।
ওজন কম রাখার চেষ্টা করুন। কারণ অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেটস সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ফলে এমনিতেই এশিয়ানদের মধ্যে ডায়াবিটিসের প্রবণতা বেশি, ওজন বেড়ে গেলে তা আরো বাড়ে। আর ডায়াবিটিসের সঙ্গে মেল ইনফার্টিলিটির যোগাযোগ যে অঙ্গাঙ্গী, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। অতিরিক্ত স্ট্রেসের সঙ্গেও ডায়াবেটিসের যোগ আছে।
সমস্যার আরেক বড় কারণ পলিউশন। তাতে নতুন মাত্রা যোগ করে ধূমপান। কাজেই এমনিতে ছাড়তে না পারলেও গর্ভসঞ্চারে অসুবিধে হলে একটুও দেরি না করে ছেড়ে দিন।
নিয়মিত সহবাস করার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে যদি স্পার্ম কাউন্ট কম থাকে। কারণ সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে, যাদের স্পার্ম এমনিতেই কম থাকে, সহবাস কম করলে তা আরো কমে যায়।
খুব বেশি ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন না। ল্যাপটপের তাপে স্ক্রোটাম গরম হয়ে গেলে স্পার্ম তৈরির প্রসেসে সমস্যা হতে পারে। টেবিলে বা বিছানায় রেখে করলে অবশ্য সমস্যা নেই।
একই কারণে খুব টাইট অর্ন্তবাস অনেকক্ষণ ধরে পরে থাকলে বা ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি চালালে সমস্যা হতে পারে। সেলফোনে অনেক সময় ধরে কথা বলাও ঠিক নয়। স্পার্ম দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গেও বন্ধ্যাত্বের একটা যোগ আছে। কাজেই কী খাবেন আর কী খাবেন না তা জেনে নিন।

কী খাবেন, কী খাবেন না
মাছ-মাংস সমৃদ্ধ সুষম খাবার খান।কারণ গবেষণা বলছে নন-ভেজিয়ারিয়ানদের তুলনায় ভেজিটেরিয়ানদের স্পার্ম কাউন্ট শুধু যে অনেক কম থাকে তা নয়,স্পার্মের তত্পরতাও কমে যায়।
খান টাটকা ফল ও রং-বেরঙের শাক-সবজি। খুব ভালো করে ধুয়ে ও বেশ খানিকক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রেখে। কীটনাশক ও রং সম্পূর্ণ ধুয়ে বার না করলে তা থেকে আবার সমস্যা হতে পারে।
অল্প করে রেড ওয়াইন, শুকনো ফল, সামুদ্রিক মাছ খান। প্রসেসড খাবারের সারভেটিক থেকে সমস্যা হতে পারে।কাজেই টাটকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।

নিরামিষ খাবার খেতে গেলে ডায়াটিশিয়ানের পরামর্শ মতো খান। ভিটামিন ডেফিসিয়েন্সি হলে বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় পড়তে পারেন। সপ্তাহে এক-আধ দিনের বেশি জাঙ্ক ফুড, ফাস্ট ফুড খাবেন না। এ সব বেশি খেলে এক দিকে যেমন ভিটামিন ডেফিসিয়েন্সি হয়, শরীরে রিয়েকটিভ অক্সিজেন স্পিসিস বাড়ে,ওজন বেড়েও সমস্যা হতে পারে।

সয়া প্রোডাক্ট খুব একটা খাবেন না। কারণ এতে আইসোফ্ল্যাভোন নামে যে রাসায়নিক আছে তা স্ত্রী যৌন হরমোন ইস্ট্রোজেনের সমতুল্য। নিয়মিত খেলে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যেতে পারে।
প্রসেসড মাংস, যেমন, সসেজ, বেকন না খাওয়াই ভালো। এতে শুক্রাণুর গুণগত মান খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
মাঝে মধ্যে এক-আধ পেগ মদ খেতেই পারেন। কিন্তু তার বেশি হলে টেস্টোস্টেরন লেভেল কমে স্পার্ম তৈরির হার কমে যেতে পারে। খারাপ হতে পারে স্পার্ম কোয়ালিটিও। অতিরিক্ত মদ্যপানের হাত ধরে ওবেসিটি দেখা দিলে তো কথাই নেই।–ওয়েবসাইট


এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি