স্পষ্ট করে কোনও নির্দিষ্ট কারণ না জানালেও বিজ্ঞানীদের ধারণা, গত ১০০ বছরে পৃথিবীতে বিপুল পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হয়েছে। ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের উৎপত্তি হয়েছে অনেক বেশি। আর এই বিষয়টা অক্সিজেন কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে।
কীভাবে এই সিদ্ধান্তে এলেন বিজ্ঞানীরা ? গ্রিনল্যান্ড ও আন্টার্কটিকায় হাজার বছর ধরে জমাট বেঁধে আছে যে বরফ, সেই বরফের ভিতর থেকে বুদবুদ সংগ্রহ করেন তাঁরা। পরে তার মধ্যেকার অক্সিজেন তাঁরা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন। তবে নিছকই কৌতুহলবশে তাঁরা এই পরীক্ষা চালান বলে বিজ্ঞানীরা জানান। পরে তাঁরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে বর্তমানে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের যে মাত্রা তা আগের লক্ষাধিক বছর আগের তুলনায় অনেকটাই কম। বর্তমানে অক্সিজেনের মাত্রা মোটামুটি ২১ শতাংশ। বিজ্ঞানীদের আরও পর্যবেক্ষণ, অক্সিজেনের মাত্রা কম মানে এটা নয় যে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বায়ুমণ্ডলে বেড়ে গেছে।
অক্সিজেন কমে যাওয়ার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা আরও একটি বিষয়কে সামনে এনেছেন। তা হল সমুদ্রের জলের সংস্পর্শে থাকা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।
বিজ্ঞানীদলের সদস্য ডঃ হিগিনস জানান, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সামুদ্রিক জলতল যত উত্তপ্ত হবে, তত তা বেশি অক্সিজেন শোষণে সমর্থ হয়ে উঠবে। উলটোদিকে জলতল যত ঠান্ডা হবে তত তা গ্যাস শোষণে সমর্থ হবে।
তিনি আরও জানান, পৃথিবীতে অক্সিজেনের ইতিহাস যদি ঘেঁটে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে জটিল জীবনযাপনের সঙ্গে বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিজ্ঞানীদের ইঙ্গিত, জটিল জীবনযাপন প্রক্রিয়া কিয়দংশে হলেও অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ সম্প্রতি সায়েন্স নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।