শনিবার,১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


কেরি-খালেদা বৈঠকের পর এ বছর কোন আন্দোলনে যাচ্ছে না বিএনপি


পূর্বাশা বিডি ২৪.কম :
০৯.১০.২০১৬

bnp-logo-new-site_7-550x308

ডেস্ক রিপোর্ট : কেরি-খালেদা জিয়ার বৈঠকের পর সহনশীল ও ধীর চলে নীতি অনুসরণ করছে বিএনপি। এ বছর আর কোন আন্দোলনে যাচ্ছে না বিএনপি । আগামী বছর আন্দোলনের চিন্তা রয়েছে দলটির। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ সফরকালে একান্ত বৈঠক করেছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি। তাদের মধ্যে ১০ মিনিট একান্ত বৈঠক হয়। সেখানে খালেদা জিয়া আর জন কেরি কেবল ছিলেন। এই সময়ে দুইজনে কথা বলেছেন আগামী দিনের পাস্পারিক সহযোগিতা ও দুই পক্ষের কৌশল নিয়ে। বৈঠকের পর এই বিষয়ে খালেদা জিয়া নেতাদেরকে বিশেষ কিছুই বলেননি। তবে কাছের কয়েকজন বিষয়টি জানেন।

সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচন ও সেই দিকে সরকারকে নিয়ে যাওয়ার জন্য করনীয় সম্পর্কে খালেদা জিয়া কয়েকজন নেতাকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। এরমধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম রয়েছেন। খালেদা জিয়া তারেক রহমানকে বৈঠকের বিষয়টি জানিয়েছেন। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে আন্তর্জাতিক মহলের পুরোপুরি সমর্থন ও সহযোগিতা পেতে হলে জনগণকে পাশে রাখতে হবে। জনগণকে পাশে রাখার জন্য জনসম্পৃক্ত কর্মসূচী বাড়াতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ট সূত্র এবং দলের একজন সিনিয়র নেতা বলেন, গত ২৯ আগষ্ট বিকেলে ম্যাডামের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরির একান্ত বৈঠক হয়েছে। প্রথমে ম্যাডামের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেরি। এরপর অনুষ্ঠিত হয় একান্ত বৈঠক। কেরি তার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ওই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতাসীন হলে যুক্তরাষ্ট্রকে কি কি সুবিধা দেওয়া হবে তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কি চায় তাও জানিয়েছে। বিনিময়ে তারা যে সহযোগিতা করবে সেই আশ্বাসও দিয়েছে।

সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছে বঙ্গপোসাগরে তাদের একটি অবস্থান তৈরি করা । এটা তারা করতে চায় চীন, পাকিস্তানের জন্য। চীন ও পাকিস্তানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে সিদ্ধান্ত তা কার্যকর করতে হলে ভারত, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রয়োজন। সেই সহযোগিতা বাংলাদেশ আগামী দিনে কিভাবে করবে সেই ব্যাপারে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে সহযোগিতা কেমন করে দেওয়া হবে সেটাও আশ্বাস দেওয়া হয়। কেরির সঙ্গে বৈঠকের পর খালেদা জিয়া এটা বুঝতে পেরেছেন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাপ তৈরি করবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক অন্যান্য মহলও যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকবে। বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষে নির্বাচন করানোর জন্য জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহল আবারও চাপ তৈরি করবে। তারাও সরকার এই ব্যাপারে অনমনীয় ও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে রাজি না হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল আরো সময় নিতে চাইছে। তাদের সময় নেওয়ার জন্য এখনই বিএনপি বিশেষ সহযোগিতা পাচ্ছে না। তবে আগামী দিনের জন্য আশ্বাস পেয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান অনেকটাই সহনশীল নীতি অনুসরণ করছে। সেই সঙ্গে ধীরে চলা নীতি অনুসরণ করছেন।

নেতা কর্মীদেরও আপাতত আগ্রাসী হওয়া ও মাঠে নামার ব্যাপারেও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। দলকে সুসংগঠিত করেই তারা এগিয়ে যেতে চাইছে।

সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার সঙ্গে জন কেরির ওই দিন ৪৫ মিনিট বৈঠক হয়েছে। এরমধ্যে দশ মিনিট ছিলো একান্ত বৈঠক। কিন্তু এই একান্ত বৈঠকের বিষয়টি বিএনপির তরফ থেকে অনেকটা গোপনীয়তার মধ্যে রাখা হয়।

সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে খালেদা জিয়া সার্বিক বিষয়তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশের মানুষের ও বিএনপির জন্য বিশেষ করে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন সেই সম্পর্কে আলোচনা করেছেন ও আশ্বাস পেয়েছেন। এই কারণে বিএনপি এখনও পর্যন্ত কোন ধরণের আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এমনকি এই বছরের মধ্যে আন্দোলন করবে এমন কোন প্রস্তুতিও তাদের নেই। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এরপর তারা পরবর্তী কর্মসূচী দিবে। তবে এই বছরের মধ্যে বিএনপি সকল জেলা কমিটি গঠনের কাজ শেষ করবে। কমিটি গঠন করার পর খালেদা জিয়া বিভিন্ন জেলা সফর করবেন এবং সমাবেশ করবেন। জনমত গঠন করার জন্য বিভিন্ন সমাবেশেও বক্তৃতা করবেন। এরপর পরবর্তী কর্মসূচী ঠিক করবেন। এখন জনমত তৈরি করাই প্রধান কাজ।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আন্দোলনে নামার জন্য এখনও আমরা কোন দিনক্ষণ ঠিক করিনি। তবে সরকার যে আগামীতে আরো একটি পাতানো ও পরিকল্পিত নির্বাচন করতে চাইছে এই ব্যাপারে আমরা জনগণকে পাশে নিয়ে প্রতিবাদ গড়ে তুলবো। তিনি বলেন, আমাদের চেয়ারপারসন জেলা কমিটি গঠনের পর বিভিন্ন জেলায় গণসংযোগ করবেন। সমাবেশ করবেন। ধীরে ধীরে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌছাঁনোর জন্য চেষ্টা করবো। তবে আমরা এখন তাড়াহুড়া করছি না।



এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি