ডেস্ক রিপোর্ট:
বরিশালে আবাসিক হোটেলে পাঁচ বছরের শিশু আবির ইসলাম জিহাদ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, জিহাদের মা মরিয়ম বেগমের সঙ্গে অনেকদিন ধরে মিলন হাওলাদারের পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল। তাদের অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে বিঘ্ন ঘটায় জিহাদকে মারধর ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মিলন।
এই ঘটনায় প্রেমিক মিলন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে প্রাথমিক তদন্তে মা মরিয়ম বেগম সম্পৃক্ত না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশালের কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন।
তিনি জানান, নিহত শিশুর দাদি নাসিমা বেগম বাদী হয়ে মিলনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মিলন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাদী বলেন, ‘আমি ও আমার ছেলে আল আমিন অনেকবার জিহাদকে নিতে তার নানাবাড়ি পটুয়াখালীতে গিয়েছি। কিন্তু মরিয়ম তাকে আমাদের কাছে দেয়নি। গত রোববার জানতে পেয়েছি বরিশালে জিহাদ মারা গেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, তাকে খুন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমিতো অশিক্ষিত মানুষ। পুলিশ মামলা লিখে দিয়েছে। জিহাদের মা বলেছে সে মার্ডার করেনি। একাই মার্ডার করেছে মিলন।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) বিপ্লব কুমার রায় জানান, ৬ মাস আগে নগরীর পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা আল আমিন ও তার স্ত্রী মরিয়মের মধ্যে ডিভোর্স হয়। এরপর মরিয়ম তার ৫ বছর বয়সী ছেলে আবির ইসলাম জিহাদকে নিয়ে পটুয়াখালীতে বাবার বাড়ি চলে যায়।
কিছুদিন পর মরিয়ম মিলন হাওলাদারের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। গত ২৫ এপ্রিল মিলনের সঙ্গে দেখা করতে এলে মরিয়ম ও তার ছেলে জিহাদকে নিয়ে বরিশালের বান্দ রোডের হোটেল বায়েজিদে রুম ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন মিলন।
বিপ্লব কুমার আরও জানায়, জিহাদকে নিয়ে হোটেলে থাকতে অস্বস্তিবোধ করেন মিলন। জিহাদের জন্য মরিয়মের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বিঘ্ন হচ্ছিল মিলনের। এ জন্য গত ৩০ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় মরিয়ম ঘুমে থাকায় তার পাশ থেকে জিহাদকে তুলে নিয়ে যায় মিলন। পরে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ কোয়াটারের একটি পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে গিয়ে বুক, পিঠ ও মাথায় এলোপাথাড়ি মারধর করেন। এ সময় জিহাদ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হোটেল রুমে রেখে পালিয়ে যান মিলন।
জিহাদের মা মরিয়ম ঘুম ভেঙে ছেলের এই অবস্থা দেখে হোটেলে ম্যানেজারের সহায়তায় জিহাদকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।