প্রচ্ছদ 
বাংলাদেশের আর্থিক খাত সংস্কারে সহায়তার প্রস্তাব আইএমএফের
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ঘটনাকে ‘বাংলাদেশ ২.০’ নামে অভিহিত করা হচ্ছে। এটি যেন স্বাধীনতার দ্বিতীয় সূর্যের উদয়, যা নতুন বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে। তবে পরিবর্তিত এই প্রেক্ষাপটে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সংস্কার করা এবং উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়া।
‘বাংলাদেশ ২.০’ নামে এই নতুন যাত্রায় ঢাকার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটন-ভিত্তিক ঋণদাতা সংস্থাটি বিষয়টি নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য ঢাকায় একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘের বার্ষিক সাধারণ পরিষদের সাইডলাইন বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠককালে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা তার সমর্থন জানিয়ে বলেন, “এটি আর আগের দেশ নয়, এটি বাংলাদেশ ২.০”।
বৈঠকে ড. ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠিত ছয়টি কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এই কমিশনগুলো নির্বাচন, বেসামরিক প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম এবং সংবিধানে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সুপারিশ করবে বলে জানান তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, “কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে”। তিনি আরো জানান, সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপন ও ভোটার তালিকা প্রস্তুত হলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদক্ষেপগুলোতে দ্রুত সহায়তা প্রদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে আইএমএফ।
আইএমএফের প্রধান নির্বাহী ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, “বাংলাদেশে দ্রুত একটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে, এবং তারা এখন ঢাকায় অবস্থান করছে। আগামী মাসে তারা আইএমএফ পরিচালনা পর্ষদের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে।”
বৈঠকে তিনি আরো বলেন, “আইএমএফ বোর্ড টিমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশের জন্য নতুন একটি ঋণদান কর্মসূচি শুরু করতে পারে, অথবা বিদ্যমান সহায়তা কর্মসূচির অধীনে আরও ঋণ প্রদানের প্রসার ঘটাতে পারে।”
এ সময় জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পরিবহন উপদেষ্টা ফৌজুল কবির খান এবং ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। উপদেষ্টা ফৌজুল কবির খান আইএমএফ প্রধানকে জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ‘অপরাধের স্থাপত্য’ ভেঙে ফেলেছে।
অন্যদিকে, অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য অর্থপ্রদানের ভারসাম্য বজায় রাখতে আইএমএফের সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, বিনিময় হার স্থিতিশীল করতে আইএমএফের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।
