বাংলাদেশকে ২,৯৭৪ কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার চুক্তি সই করল জাপান
বাংলাদেশকে ২৪.৮৮ কোটি ডলার ঋণ দেবে জাপান। বর্তমানে প্রতি ডলার ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ২,৯৭৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের মধ্যে এই ঋণ চুক্তি সই হয়েছে।
জাপান সরকারের ৪৫তম ওডিএ (অফিশিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স) লোন প্যাকেজের প্রথম ব্যাচের আওতায় ‘যমুনা রেলওয়ে ব্রিজ কনস্ট্রাকশন প্রজেক্ট’ এবং ‘চট্টগ্রাম স্যুয়ারেজ সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প’ এই ঋণের আওতায় রয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা অবস্থানরত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী চুক্তি সই করেন। চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের NEC-২ সভাকক্ষে সম্পন্ন হয়।
‘যমুনা রেলওয়ে ব্রিজ কনস্ট্রাকশন প্রজেক্ট’-এর মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ১৬,৭৮০ কোটি টাকা। প্রকল্পে জাইকা ঋণ ১২,১৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের নির্মাণ কাজের জন্য সুদের হার ১.৭০ শতাংশ, পরামর্শকের জন্য ০.৪০ শতাংশ এবং এককালীন ফি ০.২০ শতাংশ। ঋণ পরিশোধকাল ৩০ বছর, যার মধ্যে ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ড রয়েছে। এই প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে চীন ২৩.৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে।
অপর প্রকল্প, ‘চট্টগ্রাম স্যুয়ারেজ সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প’-এর প্রাক্কলিত ব্যয় ৫,১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। প্রকল্পে জাইকা ঋণ ৪,১৪৪ কোটি টাকা প্রদান করবে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল জানুয়ারি ২০২৫ থেকে নভেম্বর ২০৩২ পর্যন্ত। এর মূল উদ্দেশ্য চট্টগ্রাম শহরে একটি কার্যকর পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং পাম্পিং স্টেশন, পাইপলাইন, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টসহ পয়োনিষ্কাশন সুবিধা উন্নয়ন করে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং জলজ পরিবেশ রক্ষা করা। প্রকল্পের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের জন্য জাইকা ১৩ কোটি ডলার ঋণ দেবে।
এই ঋণের সুদের হার ০.২০ শতাংশ, এককালীন ফি ০.২০ শতাংশ এবং ঋণ পরিশোধকাল ৩০ বছর (১০ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ)।
দ্বি-পাক্ষিক পর্যায়ে জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়। স্বাধীনতার পর থেকে জাপান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন খাতে উল্লেখযোগ্য সহায়তা প্রদান করে আসছে। বাংলাদেশের সরকারী অগ্রাধিকারের সাথে সমন্বয় রেখে অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন, পরিবেশ উন্নয়ন, পল্লী উন্নয়ন ও মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে জাপান সরকার ৩২.৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।