প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটাররা যেন কোনো ভয় বা বাধা ছাড়াই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সেজন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি পুলিশের ওপর জোর দিয়ে বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অডিটোরিয়ামে ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ সদস্যদের বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সব প্রার্থীর প্রতি সমান আচরণ এবং ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “যদি কোনো ব্যক্তি অনিয়ম বা অন্যায়ের মাধ্যমে নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি কখনই ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। তাই পুলিশ সদস্যদের কেউ যেন কোনো অনৈতিক কাজে ব্যবহার করতে না পারে। আপনাদের সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থাকতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “ভবিষ্যতে পুলিশ বাহিনীকে যেন কোনো দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা না হয়, সেজন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জরুরি। নির্বাচনের আগের এই সময় অত্যন্ত সংবেদনশীল। পরাজিত শক্তি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।”
তিনি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা এখন এক যুদ্ধাবস্থায় আছি। কিছু অশুভ শক্তি আমাদের স্বপ্ন ও ঐক্য ভেঙে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের মোকাবিলায় পুলিশকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে।”
ইউনূস পুলিশের ধৈর্যের প্রশংসা করে বলেন, “গত কয়েক মাসে বিভিন্ন আন্দোলনে পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত ধৈর্য ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। আগামীতেও এই ধারা বজায় রাখতে হবে।”
তিনি পুলিশের জনবান্ধব ভাবমূর্তি গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে বলেন, “পুলিশ মানুষের বন্ধু— এই বিশ্বাস জনগণের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এবার প্রথমবারের মতো পুলিশ সপ্তাহে ধর্মীয় নেতা, সাংবাদিক ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হবে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। প্রতি বছর এমন আয়োজন করা উচিত, যাতে পুলিশ ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব কমে আসে।”
এই অনুষ্ঠানে পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।