শুক্রবার,৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


হাসপাতালের মেঝেতে রেখে শিশুদের নিউমোনিয়ার চিকিৎসা


পূর্বাশা বিডি ২৪.কম :
০৫.০১.২০১৭

thakurgaon-sisu20170105112634

পূর্বাশা ডেস্ক:

তীব্র শীতে ঠাকুরগাঁওয়ে নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়ায়সহ শীতজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গত ছয় দিনে জেলায় তিন শতাধিক শিশু ও বৃদ্ধ হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগে প্রতিদিন ধারণক্ষমতার পাঁচ গুণের বেশি শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে। শয্যা কম থাকায় হাসপাতালের ওয়ার্ডের মেঝেতে রেখে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ১৮ শয্যার শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডে সোমবার (২ জানুয়ারি) রাত পর্যন্ত ১৩০ জন শিশু ভর্তি ছিল। এসব শিশুর বেশির ভাগই ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। মঙ্গলবার দুপুরে ৬০ জন শিশুকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। আর ৩২ জন নতুন শিশু ভর্তি হয়। ওইদিন দুপুর পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডে ১০১ জন শিশুকে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। এর মধ্যে ৭৫ জন শিশু ডায়রিয়া ও ২৬ জন শিশু শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত।

শয্যা সঙ্কটের কারণে বেশির ভাগ শিশুকে ওয়ার্ডের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বারান্দায় বিছানা পেতে শিশুর চিকিৎসা করাচ্ছেন অনেক অভিভাবক।

হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বারান্দায় বিছানা পেতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত আট মাসের শিশু শাহিনের চিকিৎসা করাচ্ছিলেন সদর উপজেলার নারগুন গ্রামের রহিমা বেগম। তিনি বলেন, গত শুক্রবার আমার নাতনির বমি শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হলে শনিবার সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে এসে দেখি, বেড নাই। শেষে উপায় না দেখে মেঝেতে কম্বল পেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। কিন্তু শাহিনের অবস্থার খুব একটা উন্নতি হচ্ছে না।

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর গ্রামে থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে চিকিৎসা নিতে আসা দিরেন রায় বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত নয় মাসের ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। দুই দিন ধরে হাসপাতালের বারান্দায় থেকে ছেলের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। রাতে ঠাণ্ডা বাতাস বারান্দার রোগীদের কাবু করে দেয়। তখন বাড়তি কম্বল দিয়ে ছেলের শরীর ঢেকে দিই। তবু ঠাণ্ডা লাগে।

সদর উপজেলা গড়েয়া এলাকা থেকে মোকলেসা খাতুন বলেন, শিশুটিকে ভর্তি করার পর থেকে দেখি একটা বেডে তিন জন করে আছে। আর মেঝেতে তো কোনো জায়গায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

নবজাতক ও শিশু বিভাগের চিকিৎসক ড. শাহজাহান নেওয়াজ বলেন, শয্যা না থাকায় কনকনে শীতের মধ্যেই ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের রোগে আক্রান্ত শিশুদের ওয়ার্ডের মেঝেতে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দিতে বাধ্য হচ্ছি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও ঠাকুরগাঁওয়ের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল কবির বলেন, শুধু শিশু ওয়ার্ডে নয়, সব ওয়ার্ডেই প্রতিদিন ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি রোগী ভর্তি হয়। এই স্বল্প জনবল দিয়ে আমরা সব রোগীর চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।

সূত্রঃ জাগো নিউজ



এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি