রবিবার,১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


কুমিল্লার চান্দিনায় স্কুলছাত্রীকে হত্যা করলেন ২ মামা!


পূর্বাশা বিডি ২৪.কম :
২২.০৫.২০২১

ডেস্ক রিপোর্টঃ

এক স্কুলছাত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার মামার বাড়ির পরিবারের বিরুদ্ধে

বিয়ের এক মাসের মাথায় স্বামীর বাড়ি থেকে প্রেমিক শাকিলের হাত ধরে পালিয়ে যায় স্কুলছাত্রী ফারজানা। পরদিন ৬ মে প্রেমিকের কাছ থেকে ফিরিয়ে এনে শাসনের নামে তার ওপর চলে অমানবিক নির্যাতন। দুই মামার বেধরক মারধরের এক পর্যায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ফারজানা। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ৭ মে দুপুরে তড়িঘড়ি দাফন সম্পন্ন করে পরিবারের সদস্যরা। জেলার চান্দিনায় উপজেলার বরকইট গ্রামের হাতগন্ডিপাড় এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রায় ২ সপ্তাহ গড়িয়ে গেলেও এ মৃত্যুর বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, মৃত্যুর পর তার মুখে ও শরীরে বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে দুই মামা হানিফ ও হাবিব। গ্রাম্য মাতাব্বর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দারস্থ হন তারা। এমন পরিস্থিতিতে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কেউ একজন আত্মহত্যার বিষয়টি জানালে সেটিও ময়নাতদন্ত করবে পুলিশ। স্থানীয়দের এমন চ্যালেঞ্জের মুখে ‘আত্মহত্যার’ পরিবর্তে ‘ফারজানা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে’ বলে বলাবলি শুরু করে। আর সে অনুযায়ী দাফনের সিদ্ধান্ত নেয়। ঘটনার এক সপ্তাহ পর জনমুখে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য ওঠে আসে।

জানা যায়, বাবা মারা যাওয়ার পর ফারজানা তার মায়ের সঙ্গে উপজেলার বরকইট গ্রামে মামার বাড়িতে এসে বরকইট উদয়ন উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ওই সময় এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ফারজানার। তার ওই সর্ম্পকের কথা জেনে ৯ এপ্রিল অন্যত্র বিয়ে দেয় মামারা। বিয়ের এক মাসের মাথায় ৫ মে স্বামীর বাড়ি থেকে প্রেমিক শাকিলের হাত ধরে পালিয়ে যায় ফারজানা। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি তার বড় বোন মৌসুমীসহ দুই মামা আবু হানিফ ও হাবিব উল্লাহ। নিহত ফারজানা বরকইট উদয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বাবা আলী হোসেন মারা যাওয়ার পর তার মায়ের সঙ্গে মামার বাড়িতেই বেড়ে উঠে।

লাশ গোসল করানোর কাজে অংশ নেয় হাকমতের নেছা (হাসু), জেসমিনসহ আরও দুজন। তারাই নিশ্চিত করে নিহতের শরীরের একাধিক স্থানে নীলা-ফুলা দাগ রয়েছে। স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, মেয়েটি যেদিন মারা গেছে ওই রাতে তাকে অনেক মারধর করা হয়েছে বলে শুনেছি। মেয়েটির ব্যাপারে খবর নিতে গেলে ওই বাড়ির একজন সদস্য জামাল সরকার জানিয়েছেন, তারা এলাকার চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশকে জানিয়েছেন। পরে আমি চলে আসি। বরকইট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেম জানান, মেয়েটি মৃত্যুর পর স্থানীয় কয়েকজন গ্রাম্য মাতাব্বর ও বাড়ির লোকজন এসে আমাকে জানিয়েছে মেয়েটি বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তখন আমি থানার শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিই। কিছুক্ষণ পর শুনি মেয়েটি স্ট্রোক করে মারা গেছে। ২-৩ দিন পর শুনি আবার অন্য কথা।

চান্দিনা থানার ওসি মো. শামসুদ্দীন ইলিয়াছ জানান, সাংবাদিকদের মাধ্যমে ঘটনাটি শুনেছি। স্থানীয় কেউ আমাকে জানায়নি। এ মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি