বুধবার,৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


শ্রেণিকক্ষে ঢুকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে শিক্ষার্থীদের পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান


পূর্বাশা বিডি ২৪.কম :
১৭.০৩.২০২৩

ডেস্ক রিপোর্টঃ

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটালেন গোমতি ইউপি চেয়ারম্যান মো. তফাজ্জল হোসেন। গোমতি বিরেন্দ্র কিশোর (বিকে) উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণির পাঠদান চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার বিদ্যালয়ে শ্রেণি পাঠদান চলাকালে এ ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি পরে জানাজানি হয়।

গোমতি বিরেন্দ্র কিশোর (বিকে) উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শারমিন আক্তার বলেন, সকালে আমি ক্লাসে পাঠদান করাচ্ছিলাম। এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শ্রেণিকক্ষের পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেন। চেয়ারম্যান বাচ্চাদের পাঠ্যবই থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন এবং পাঠ্যবই ‘রিডিং পড়তে’ বলেন। বই থেকে বিভিন্ন শব্দার্থ জিজ্ঞাস করেন তিনি। বাচ্চারা ভয়ে রিডিং পড়তে পারে নাই। পরে চেয়ারম্যান রেগে যান। এ সময় তিনি আমাকে বেত নিয়ে আসতে বললে বিদ্যালয়ে বেতের ব্যবহার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। বিদ্যালয়ে বেত না থাকায় আমাকে বাঁশের কঞ্চি নিয়ে আসতে বাধ্য করেন। পরে তিনি বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ক্লাসের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থীকে পেটান।

বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদা আক্তার বৃষ্টি, আয়েশা আক্তার জেরি, ঝরনা ত্রিপুরা, ফাহাদুল ইসলাম সিয়াম জানায়- চেয়ারম্যান পেছনের দরজা দিয়ে ক্লাসে ঢুকেন। আমরা সবাই ভয় পেয়ে যাই। ইংরেজি ক্লাস কোন স্যার নেন সেটা জিজ্ঞাসা করেন। পাঠ্যবই থেকে আমাদের পড়া ধরেন। আমরা কোনো কথা বলি নাই। উনি আমাদের গালিগালাজ করেছেন। আমাদের পড়ালেখার করার জন্য নিষেধ করেছেন। ম্যাডামকে বেত আনতে বলেন। পরে বেত দিয়ে আমাদের মেরেছেন।

বিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, যে কেউ প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করলে পারমিশন লাগে। তিনি কারো কাছ থেকে পারমিশন নেননি। ওই দিনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা জানান, যেদিন চেয়ারম্যান ক্লাশে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মারধর করেন সেদিন আমি দাপ্তরিক কাজে মাটিরাঙা উপজেলা সদরে ছিলাম। পরে বিদ্যালয়ে আসার পর আমি ঘটনা জানতে পারি।

শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান মো. তফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি ‘মেজাজ হারিয়ে’ এ কাজটি করেছি। তাদের (শিক্ষার্থী) পাঠ্যবইয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানতে চেয়েছি। এ সময় শিক্ষার্থীরা আমার সঙ্গে কোনো কথায় বলেনি। পরে ম্যাডামকে বেত আনতে বলেছি। সামনের বেঞ্চের শিক্ষার্থীদের চিকন একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে আঘাত করেছি। আমরা অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। তারা আমার সঙ্গে কথা না বলায় মেজাজ হারিয়েছি।

এ ঘটনায় স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী। তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, বেত্রাঘাতের শিকার শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা আমার কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেব। কার্যক্রম চলমান আছে।



এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি