প্রচ্ছদ 
অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য সংগ্রহ শুরু হচ্ছে আগামীকাল
আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারির মূল তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম। ১৫ দিনব্যাপী এই শুমারির তথ্য সংগ্রহের কাজ চলবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সারা দেশে ৯৫ হাজার তথ্য সংগ্রহকারী এবারের শুমারিতে তথ্য সংগ্রহ করবেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রতি ১০ বছর পর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য এমন শুমারি পরিচালনা করে থাকে। ইতোমধ্যে প্রচারণা ও অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শুমারির সফল বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ প্রকল্প নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সম্মেলন কক্ষে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। শুমারির বিস্তারিত তুলে ধরেন জনশুমারি প্রকল্পের ডিপুটি প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এস এম শাকিল আখতার। আরও উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. হামিদুল হক, যুগ্ম সচিব ড. দীপঙ্কর রায় প্রমুখ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অর্থনৈতিক শুমারিতে এবার ৭০টি প্রশ্ন থাকবে। এবারে প্রথমবারের মতো ট্যাবের মাধ্যমে ক্যাপি পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। ইতোমধ্যে লিস্টিংয়ের মাধ্যমে ১ কোটি ২২ লাখ ইউনিট চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সেখান থেকে এবং এর বাইরে থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এবারের শুমারি থেকে প্রথমবারের মতো জানা যাবে দেশে কতজন বিদেশি কর্মী রয়েছেন, তারা কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানে কোন পদে কর্মরত আছেন, এবং নারী-পুরুষের সংখ্যা কী—এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হবে।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন জানান, শুমারির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) ও জিওকোড সমন্বয় করে ডিজিটাল ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত ট্যাবলেটগুলো মোবাইল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট (এমডিএম) সফটওয়্যার ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তথ্য সংগ্রহের পর সেগুলো বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড (বিডিসিসিএল) এর মাধ্যমে গোপনভাবে সংরক্ষিত হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এই তথ্য পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী সুরক্ষিত থাকবে, যাতে শুমারি কর্মীদের সহযোগিতার পাশাপাশি জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত হয়।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দীপঙ্কর রায় জানান, শুমারির তথ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৩ ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে মাস্টার ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ, দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারী, জোনাল অফিসার ও আইটি সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ এবং তৃতীয় ধাপে গণনাকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রবণতা সম্পর্কে সঠিক ও আপডেটেড তথ্য পাওয়া যাবে, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি আরও জানান, বিবিএসের কর্মকর্তারা প্রতিটি ধাপে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন এবং এবারের শুমারি তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতিকে আরও উন্নত করার জন্য প্রচার-প্রচারণা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম করা হচ্ছে।
