প্রচ্ছদ 
রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করছে
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম মন্তব্য করেছেন, দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হবে, এমন প্রত্যাশা জনগণের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। যদি সে দল সফল হয়, তবে বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো চাচ্ছে দেশের সংস্কার তাদের (রাজনৈতিক দলগুলোর) অধীনে হোক। এজন্য তারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। তারা সংস্কারের পরিবর্তে নির্বাচনকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে ব্রিটিশ গ্লোবাল পার্টনার্স গভর্ন্যান্স (জিপিজি) প্রতিনিধিদল উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসে। এ সময় চিলির সাবেক সামাজিক উন্নয়নমন্ত্রী জর্জিও জ্যাকসন সংস্কার ও নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম এসব মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম সাক্ষাৎকালে বলেন, একটি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে, যা একটি অভিনব ঘটনা। এর আগে কখনো এমন পরিস্থিতি ঘটেনি। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা, তা তার জানা নেই। তবে তারা এমন পরিস্থিতিতে কাজ করার চেষ্টা করছেন।
স্কটিশ পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য লর্ড জেরিমাই পুরভিস অন্তর্বর্তী সরকারের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সমস্যা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাদের বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ স্থাপন করাও অন্তর্বর্তী সরকারের আরেকটি মূল চ্যালেঞ্জ।
ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসার মাট চার্টার অন্তর্বর্তী সরকার তাদের কাছে কোন কোন বিষয়ে সহযোগিতা চায়, জানতে চাইলে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং গণহত্যার বিচার সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা এবং পরামর্শ বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আন্তর্জাতিকভাবে নানান অপপ্রচার চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, গণঅভ্যুত্থানকে অনেকেই সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারছেন না। কীভাবে এত কম সময়ে এত বড় স্বৈরশাসকের পতন ঘটলো, তা মানুষও বুঝতে পারছে না। এ কারণে দেশের ভেতরে এবং বাইরে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অনেকেই এই আন্দোলনকে গণতান্ত্রিক অভ্যুত্থান হিসেবে অস্বীকার করার চেষ্টা করছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার সংকট বিরাজমান ছিল। মানুষ ভোট দিতে পারতো না, হাজার হাজার মানুষ গুম হয়ে গিয়েছিল। দেশের মানুষের মধ্যে একটি দমবন্ধ অবস্থা বিরাজ করছিল। তাই মানবাধিকার রক্ষা করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
বৈঠকে ব্রিটিশ গ্লোবাল পার্টনার্স গভর্ন্যান্স (জিপিজি) প্রতিনিধিদল নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস প্রদান করে।
