শুক্রবার,১০ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • প্রচ্ছদ » জাতীয় » বন্যায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সিলেটের শিক্ষা কার্যক্রম


বন্যায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সিলেটের শিক্ষা কার্যক্রম


পূর্বাশা বিডি ২৪.কম :
২৩.০৮.২০১৭


পূর্বাশা ডেস্ক:
চলতি মৌসুমে কয়েক দফা বন্যায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সিলেটের শিক্ষা কার্যক্রম। একই মৌসুমে বারবার বন্যার কারণে তিন দফা বন্ধ রাখতে হয়েছে এ অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাধ্য হয়ে স্থগিত করতে হয়েছে পরীক্ষাও। গেল সপ্তাহেও সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে ৩-৬ দিন পর্যন্ত বন্ধ ছিল কয়েক শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্থগিত করা হয়েছিল পরীক্ষাও।

অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে গত মার্চ মাসের শেষের দিকে সিলেট বিভাগের হাওরাঞ্চলে অকাল বন্যা দেখা দেয়। এপ্রিলের পর্যন্ত অব্যাহত এই বন্যায় বোরো ধানের সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাওরাঞ্চলের শিক্ষা কার্যক্রমও। বন্ধ হয়ে পড়ে সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের হাওর এলাকার তিন শতাধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। তখন অঞ্চলভেদে গড়ে পনের দিন বন্ধ ছিল এসব এলাকার বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম। অকাল বন্যার রেশ না কাটতেই গত জুলাইয়ের প্রথমদিন থেকে ফের বন্যা দেখা দেয় সিলেট বিভাগে। ঈদের দীর্ঘ ছুটির পর তখন সারাদেশের সবগুলো বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হলেও সিলেট ও মৌলভীবাজারের বেশিরভাগ বিদ্যালয় তখন বন্ধ ঘোষণা করা হয় বন্যার কারণে। দুই জেলার প্রায় ৪শ’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তখন আরও ১৫ দিন পাঠদান বন্ধ থাকে। দীর্ঘসময় বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় বড়লেখা, ফেঞ্চুগঞ্জের কোনো এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক মাসও বন্ধ ছিল।

জুলাইয়ের বন্যার পানি এখনও সম্পূর্ণ নামেনি। এরমধ্যে গত ১০ আগস্ট থেকে উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সিলেট, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জের অনেকস্থানে দেখা দেয় বন্যা। এ বন্যায়ও সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাওরবেষ্ঠিত জেলা সুনামগঞ্জ। এতে প্লাবিত হয়ে জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা, দিরাই, দোয়ারাবাজার ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল। স্কুল ভবনে পানি ঢুকে পড়া ও সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় জেলার ৮৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলমান পরীক্ষা স্থগিত থাকে তিন দিন। গড়ে তিন দিন বন্ধ ছিল জেলার ২৮৫টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

সুনামগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বায়োজীদ খান প্রিয়.কম-কে বলেন, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্কুল ও স্কুল সংলগ্ন এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল। এখন আবার সবগুলো স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে।

আর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, বন্যার কারণে কয়েকদিন কিছু বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

চলতি মাসের বন্যায় মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার ৪৬টি, কুলাউড়া উপজেলার ৪০টি, জুড়ি উপজেলার ১৫টি, রাজনগর উপজেলার ১৪টি ও মৌলভীবাজার সদরের ৪টি বিদ্যালয় গড়ে দুইদিন করে বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এসময় পানি ঢুকে পড়ায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সবকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তবে তিন দিনের মধ্যেই সব বিদ্যালয়ে পরীক্ষা শুরু হয় বলে জানিয়েছেন গোয়াইনঘাটের সহকারী শিক্ষা অফিসার রেজাউল ইসলাম।

এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক তাহমিনা খানম  বলেন, বন্যার কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তা কাটিয়ে উঠতে আমরা বিকল্প চিন্তা করছি। বিদ্যালয়ে পানি উঠে যাওয়ায় অনেক স্থানে এখন আশপাশের বাড়িতে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। বাড়তি সময় ক্লাস নিয়েও যাতে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হয় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।

আর মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ সিলেটের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গির কবির আহমদ বলেন, এ বছর তিন দফা বন্যার কারণে তিনবার বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হয়েছে। ফলে শিক্ষাকার্যক্রম কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপর তো আমাদের কিছু করার নেই। আগামীতে বন্ধ ও ছুটির সময়ে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হবে।

পূর্বাশানিউজ/২৩আগষ্ট ২০১৭/মাহি



এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি